বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেয়ার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার সরকার। এ মাসের শেষদিকে এ কর্মী নেয়ার এ ঘোষণা আসতে পারে।
ঘোষণা হলে আগামী আগস্ট মাস থেকেই দেশটিতে বড় পরিসরে সরকারি ও বেসরকারি প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়া শুরু হতে পারে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও বায়রার নেতারা এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতপন্থী শ্রমিক ইউনিয়নসহ এনজিও গোষ্ঠীর চাপে মালয়েশিয়া সরকার বিদেশি কর্মী নেয়া বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর দেশটির কলকারখানাসহ বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক কর্মী সংকট দেখা দেয় এমনকি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখে পড়ে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
কর্মীর চাহিদা মেটাতে সেদেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। সবদিক বিবেচনায় এনে শিগগিরই বিদেশি কর্মী নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে দেশটির সরকার।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (শ্রম) সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘কর্মী নেয়ার ব্যাপারে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এখনো অফিশিয়ালি কিছু জানা যায়নি। তবে আশা করছি খুব শিগগিরই মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার দ্বার উন্মোচন হবে।’
বায়রার মহাসচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘বিদেশি কর্মী না নেয়ার যে ঘোষণা মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে ছিল তা ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশকে সোর্স কান্ট্রি হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। দেশটিতে বর্তমানে বিদেশি কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে গত ফেব্রুয়ারিতে উভয় দেশের মধ্যে ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি সই হয়েছে। এ চুক্তির আলোকেই দেশটিতে কর্মী যাবে। চলতি মাসের মধ্যেই সে দেশ থেকে কর্মী নেয়ার চাহিদাপত্র পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। আর চাহিদাপত্র পেলেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারের ডাটাবেজ এবং এর বাইরে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মী বাছাই করবে। মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্লোবাল ডাটাবেজে নাম ওঠার পর তাদের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মালয়েশিয়া সরকার অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টার থেকে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং যৌক্তিক খরচেই একজন কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন। আমরা অভিবাসন ব্যয়টা যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে ‘জি টু জি’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। সে অনুযায়ী শুধু সরকারিভাবে মালয়েশিয়ার ‘প্লান্টেশন খাতে শ্রমিক পাঠানো হচ্ছিল। এ খাতে কাজ করতে আগ্রহীর সংখ্যা কম হওয়ায় ওই উদ্যোগে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।
পরে মালয়েশিয়ার জনশক্তির জন্য বাংলাদেশ ‘সোর্স কান্ট্রির’ তালিকায় এলে সেবা, উৎপাদন, নির্মাণসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশি কর্মী নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
0 comments:
Post a Comment