বাংলাদেশিদের জন্য সৌদি আরব, আরব আমিরাতের পরই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য বড় সম্ভাবনার খবর নিয়ে আসছে।
অবৈধ প্রায় সাড়ে তিন লাখ বাংলাদেশির মধ্যে আড়াই লাখ বৈধতার সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। আরো প্রায় এক লাখ আছে বৈধ হওয়ার অপেক্ষায়। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বৈধ হতে পারবে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী তিন বছরে দেশটি আরো ১০ লাখ কর্মী নেবে বাংলাদেশ থেকে। ওই প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মালয়েশিয়ার তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে মিয়ানমার সে দেশে তাদের কর্মী প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে। মালয়েশিয়াও ওই দেশ থেকে আর কর্মী না নেওয়ার কথা ভাবছে। আর এমনটি হলে বাংলাদেশের শ্রমবাজার গোটা সুযোগটাই কাজে লাগাতে পারে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় অবৈধ কর্মীদের বৈধকরণের বিষয়ে আমাদের হাইকমিশন নানাভাবে সহযোগিতা করছে। পাশাপাশি চলতি মাস থেকেই মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি শুরু হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে জনশক্তি পাঠাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ ছিল ২০০৯ সাল থেকে। কিন্তু তাতে থেমে থাকেনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া। বৈধভাবে সেখানে কোনো কর্মী যেতে না পারলেও শিক্ষার্থী বা ভ্রমণ ভিসায় প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে কর্মী গেছে সে দেশে। আকাশপথ ছাড়াও সমুদ্রপথে কক্সবাজার হয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে। সাত-আট বছরে যে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় গেছে তাদের মধ্যে সাড়ে তিন লাখ অবৈধভাবে সেখানে বসবাস করছিল। তাদের হাতে কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের আতঙ্ক নিয়েই বছরের পর বছর মালয়েশিয়ায় বসবাস করছিল এসব প্রবাসী। আর অসংখ্য বালাদেশি মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের অভিযানে আটক হয়ে জেল খেটে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। বাকিরা হাজার চেষ্টা করেও বৈধ হতে পারছিল না।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়া প্রবাসী অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এরই মধ্যে দুই লাখের বেশি বাংলাদেশি নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধ হওয়ার সুযোগ নিয়েছে। অন্যরাও বৈধ হতে কাগজপত্র জমা দিচ্ছে, যাদের হাতে পাসপোর্ট নেই তারা দূতাবাস থেকে পাসপোর্ট নিচ্ছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে সেখানে নিবন্ধন কার্যক্রম। এই নিবন্ধনের মাধ্যমেই অবৈধ প্রবাসীরা বৈধ হতে পারবে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালয়েশিয়া সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে অবৈধ কর্মীদের বৈধকরণের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি দেশজুড়ে গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার করে। ইমিগ্রেশন পুলিশ প্রতিদিন ব্যাপক হারে অবৈধ শ্রমিক আটক করে। একই সঙ্গে শুরু হয় অবৈধদের বৈধ করার প্রক্রিয়া। অবৈধদের সেখানে নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধ হতে জনপ্রতি নেওয়া হচ্ছে পাঁচ থেকে সাত হাজার রিঙ্গিত। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় এক লাখ টাকা থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। বৈধতা পেতে গিয়ে টাকার পরিমাণ একটু বেশি নেওয়া হলেও বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
মালয়েশিয়ায় যারা অবৈধ হয়ে পড়েছে তারা নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধ হতে গেলে প্রথমেই লাগে পাসপোর্ট। যাদের হাতে পাসপোর্ট নেই সেসব কর্মী মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারছে। মালয়েশিয়ায় যেকোনো কম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মী হিসেবে তাদের বৈধ হওয়ার সুযোগ নিতে হয়। প্রথমে দুটি ধাপে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শেষে স্বাস্থ্য সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এসব পর্ব শেষে ইমিগ্রেশন বিভাগ থেকে পাসপোর্টে ভিসা লাগানো হয়।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামের সঙ্গে শনিবার বিকেলে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে। যারা অবৈধ তারা প্রতিদিনই আমাদের দূতাবাসে এসে পাসপোর্ট নিচ্ছে। তাদের আমরা বলছি, শুধু পাসপোর্ট নিলেই হবে না, বৈধ হওয়ার সুযোগ নিতে হবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুযোগ বহাল থাকবে। ’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইতিমধ্যে প্রায় দুই লাখ প্রবাসী কর্মী নিবন্ধন করে বৈধতার সুযোগ নিয়েছে। আশা করছি, তিন লাখের বেশি কর্মী বৈধতার সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে। আর মিয়ানমার মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানি করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে, একই সঙ্গে সে দেশে অবস্থানরত শ্রমিকদের প্রত্যাহারের ঘোষণাও দেয়। আর এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে বেশি শ্রমিক মালয়েশিয়া আসার সুযোগ পাবে। ’
মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে থাকেন বাংলাদেশি কমিউনিটির মোবারক হোসেন ও মিজানুর রহমান। তাঁরা জানান, ‘একই সঙ্গে বেশ কিছু সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথমত, মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রায় সাড়ে তিন লাখ শ্রমিক বৈধতা পাচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে কয়েক বছরে আরো ১০ লাখের বেশি শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া। ডিসেম্বর থেকেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর মিয়ানমার যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে শ্রমিকদের শূন্যস্থান পূরণ হবে বাংলাদেশের শ্রমিক দিয়ে। এমন প্রত্যাশা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শিল্প-কারখানার মালিকদের। একই কথা বললেন জনশক্তি রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রার) সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় অবৈধ কর্মীরা বৈধ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। প্রত্যেক অবৈধ কর্মীর উচিত হবে এই সুযোগ নেওয়া। আর দূতাবাস যেন প্রবাসী অবৈধ কর্মীদের সহযোগিতায় আরো এগিয়ে আসে। ’ মিয়ানমারের শ্রমিক প্রত্যাহার প্রসঙ্গে বায়রার সাবেক এই মহাসচিব বলেন, ‘মিয়ানমারের বিপুলসংখ্যক শ্রমিক কাজ করে মালয়েশিয়ায়। ওই সব শ্রমিক প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে বা নতুন করে সে দেশ থেকে শ্রমিক না গেলে বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ আসবে। এ সুযোগ অবশ্যই আমাদের নিতে হবে। বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রতি মালয়েশিয়ার সরকার অনেকটাই দুর্বল। ’ রিক্রুটিং এজেন্সি আহমেদ ইন্টারন্যাশনালের মালিক ও বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদ বলেন, ‘যতটুকু জানি চলতি মাস থেকেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া শুরু করবে মালয়েশিয়া। আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। যত শ্রমিকই লাগুক আমরা সেখানে পাঠাতে পারব। ’
নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধতার সুযোগ পাওয়া এমনই একজন তানভীর আহমেদ শামীম। মিরপুরের শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা জুলফিকার আলীর ছেলে শিক্ষার্থী ভিসায় দুই বছর আগে গিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। সেখানে ভিসার মেয়াদ এক বছর থাকার পর দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধ হয়ে যান। পুলিশের হাতে আটক হওয়ার ভয় মাথায় নিয়ে কুয়ালালামপুরের একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে দেশের সরকারের বৈধকরণের সুযোগ তিনি কাজে লাগিয়েছেন। এরই মধ্যে নিবন্ধনসহ বৈধ হওয়ার প্রায় সব কাজ সম্পন্ন করেছেন। বিনিময়ে খরচ পড়েছে পাঁচ হাজার রিঙ্গিত। তানভীর আহমেদ বলেন, ‘লেখাপড়া করতে এসে দালালের প্রতারণার কারণে অবৈধ হয়ে পড়েছিলাম। নিবন্ধনের মাধ্যমে বৈধতার সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। টাকা একটু বেশি লাগলেও এখন আর দুশ্চিন্তা নেই। ’
একইভাবে সাব্বির আহমেদও মালয়েশিয়ায় গিয়ে অবৈধ হয়ে পড়েন। কিন্তু সে দেশের সরকারের বৈধ হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন। সাব্বির বলেন, ‘দেড় বছর ধরে মালয়েশিয়ায় আছি, পুলিশের অভিযানের ভয় সব সময় কাজ করত। কিন্তু সেই চিন্তা এখন আর নেই। ’ তিনি বলেন, শুধু আমি নই, আমার মতো হাজারো কর্মী এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। ’
শুধু সাব্বির আর তানভীরই নন, মালয়েশিয়ায় অবৈধ থেকে বৈধ হয়েছে দুই লাখের বেশি অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী। সাভারের হেমায়েতপুর মশারিখোলার রহিমউদ্দিনের ছেলে আরমান খলিফা থাকেন মালয়েশিয়ার পেনাং প্রদেশে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অবৈধ কর্মীর কোনো দাম নেই মালয়েশিয়ায়। অবৈধ কর্মীদের কেউ কাজ দিতে চায় না। আর যারা দেয় তারা খুবই কম বেতন দেয়। ১২০০ থেকে ১৫০০ রিঙ্গিত বেতন জোটে। কিন্তু বৈধ হওয়ার পর আমাদের বেতন হবে ১৮০০ থেকে ২৫০০ রিঙ্গিত। বৈধতার সুযোগ পেয়ে আমাদের প্রবাসীদের মধ্যে স্বস্তি কাজ করছে। ’ মৃত ইয়ানুস আলীর ছেলে জাকির হোসেন বলেন, ‘বৈধ করতে জনপ্রতি নেওয়া হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার রিঙ্গিত। অনেকের কাছে এটা অনেক বড় অঙ্ক, তারা বৈধ হতে পারছে না। তার পরও এমন সুযোগ পেয়ে প্রবাসী, তাদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের দুশ্চিন্তা কেটেছে। ’
অন্যদিকে পুনর্নিবন্ধনের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না বলে কঠোরভাবে জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জাহিদ হামিদি। উপপ্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার এটাই সর্বশেষ সুযোগ। এ সময়সীমার পর অবৈধভাবে কর্মরত কাউকে কোনো কম্পানিতে পাওয়া গেলে মালিকদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী ও মালয়েশিয়ার দূতাবাস সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে সোচ্চার মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধান। নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দেশটির প্রধান বিক্ষোভ মিছিলসহ নানাভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এই অবস্থায় মিয়ানমার সরকার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা তাদের নাগরিকদের মালয়েশিয়া থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যদি মিয়ানমারের শ্রমিক মালয়েশিয়া থেকে প্রত্যাহার শুরু হয়, তাহলে জনশক্তি নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দিকে নজর বেশি মালয়েশিয়ার। রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের দুর্বলতাও কাজ করছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া বেশি বেশি জনশক্তি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছে বলে সেখানে থাকা একাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করে।
এদিকে চলতি মাস থেকেই বাংলাদেশ থেকে নতুন করে কর্মী নেওয়া শুরু করছে মালয়েশিয়া। এরই মধ্যে সাত শতাধিক কর্মীর একটি চাহিদাপত্র বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে এসে পৌঁছেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। আগামী তিন বছরে বাংলাদেশের ৭ থেকে ১০ লাখ কর্মী নেওয়া হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।
[RTF bookmark end: ]_GoBackনির্মাণ (কনস্ট্রাকশন), বনায়ন (প্লান্টেশন) ও উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং) খাতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে কর্মী নেওয়ার জন্য যে (জিটুজি প্লাস) সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার ভিত্তিতেই কর্মী যাবে সে দেশে।
সর্বশেষ গত ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েমসহ ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সঙ্গে বৈঠক করে। সেই বৈঠকে সরকার নির্ধারিত খরচেই কর্মী নেওয়ার বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়। প্রাথমিকভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ হাজার টাকা। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার। কাজেই গুটিকয়েক রিক্রুটিং এজেন্সিকে সুযোগ না দিয়ে সরকার যে ৭৪৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছে, সেখান থেকে অভিজ্ঞ ও স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান পছন্দ মতো বেছে নিতে পারে মালয়েশিয়া।
এদিকে মিয়ানমার তাদের শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় যাওয়ার ওপর এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বৌদ্ধপ্রধান দেশ মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত অভিযানের কারণে প্রতিবেশী মুসলিমপ্রধান দেশ মালয়েশিয়ার সঙ্গে তাদের তিক্ত সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি (এএফপির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে)।
মিয়ানমারের অভিবাসন মন্ত্রণালয় তাদের নাগরিকদের কাজের জন্য মালয়েশিয়ায় যাওয়ার লাইসেন্স ইস্যু করা বন্ধ করেছে। সে দেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে ওই মন্ত্রণালয় জানায়, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমার সাময়িকভাবে ৬ ডিসেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করেছে। ’
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের শ্রমিকদের শীর্ষ গন্তব্য মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে মিয়ানমারের কয়েক লাখ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। মিয়ানমার তাদের শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিলে বা নতুন করে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করলে এ সুযোগ বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারে। বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি অবগত আছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, এমন সুযোগ কাজে লাগাতে যেকোনো উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। kalerkantho
0 comments:
Post a Comment