জনশক্তি রপ্তানিতে ২০১৬ সাল হবে টার্নিং পয়েন্ট

জনশক্তি রপ্তানিতে ২০১৬ সাল হবে টার্নিং পয়েন্ট২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে অন্তত সাড়ে ৬ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর অভিবাসন বেড়েছে। চলতি বছরের ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশ গিয়েছেন ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭০ বাংলাদেশি কর্মী। সে হিসাবে অভিবাসন বেড়েছে ৩০ শতাংশ। ২০১৪ সালে ৪ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৪ জন বাংলাদেশির বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। দেশের মানুষকে বিভিন্ন পেশায় দক্ষ করে জনসম্পদে পরিণত করার উদ্যোগ নেওয়ায় এ সফলতা এসেছে। গতকাল রাজধানীর ইস্কাটনের প্রবাসীকল্যাণ ভবনে আমাদের সময়কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর বন্ধ থাকা বৈদেশিক শ্রমবাজার নিয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না এলেও ২০১৬ সাল হবে টার্নিং পয়েন্ট। প্রচলিত ও নতুন শ্রমবাজার নিয়ে আমি আশাবাদী। গত বছরের তুলনায় এ বছর একদিকে যেমন বিদেশে কর্মীদের যাওয়া বেড়েছে, একইভাবে নতুন শ্রমবাজারেরও সন্ধান মিলেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর প্রচলিত দেশের পাশাপাশি নতুন নতুন দেশের শ্রমবাজারে পা রাখবেন বাংলাদেশের কর্মীরা।


প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ৬ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েই সরকার অগ্রসর হচ্ছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর সৌদি আরব সফর করবÑ এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। এভাবেই সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রচলিত শ্রমবাজারের বন্ধ দরজা উন্মুক্ত করার চেষ্টা করছি। ইউএইর মন্ত্রীর সঙ্গে ইতোমধ্যে কথা বলেছি। আমাদের অনুরোধে দেশটির সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া শুরু করেছে। অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সমঝোতা সইয়ের খসড়া প্রস্তুত রয়েছে। শিগগির তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাবে বলে আশা করছি। এরপর ‘জিটুজি প্লাস’ সমঝোতা সই হবে উভয় দেশের মধ্যে।


নতুন শ্রমবাজার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে থাইল্যান্ড এবং পরে অস্ট্রেলিয়া সফর করা হয়েছে। থাইল্যান্ড সরকার একটা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব করেছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সঙ্গেও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এই দুই দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থদের সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করেছি। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ থেকে কৃষি শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। থাইল্যান্ড সরকারের সঙ্গেও বিভিন্ন খাতে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উন্নত দেশে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও নির্বিঘœ করতে বিদেশগামী জনশক্তির ভাষাগত দক্ষতা বাড়ানোর দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলায় বিদেশি ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আরবি, ইংরেজি, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ ও জার্মান ভাষা শেখানো হবে সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোয়। আমরা কানাডায়ও বাংলাদেশের কর্মী পাঠাতে চাই। এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করা হচ্ছে, জানান প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী।


নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে বর্তমানে ৪৭টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি), ১টি বিআইএমটি ও ৫টি আইএমটি রয়েছে। চট্টগ্রামে ১টি আইএমটি স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বছর আন্তর্জাতিক সংস্থা সিটি অ্যান্ড গিলসের মাধ্যমে টিটিসির মাধ্যমে ৫০ জন প্রশিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৪০ উপজেলায় টিটিসি স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে।
Share on Google Plus

About Jessica Hornberger

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment