সিঙ্গাপুরে শ্রমিক পাঠাতে সতর্কতা প্রয়োজন





(mzamin)সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানোর আগে বাছাই ও পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় সতর্কতার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শ্রমিক পাঠানোর বাছাই ও পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী ও ধারাবাহিক রাখার দিকে জোর দিতে হবে। সিঙ্গাপুরে পাঠানোর আগে তাদের অতীত ইতিহাস কঠোরভাবে যাচাই করতে হবে। যেন তারা দেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারেন। 


সিঙ্গাপুরে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে গত ১৬ই মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে এমনটাই পরামর্শ দিয়েছেন সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে নিযুক্ত হাইকমিশনার মাহবুব উজ জামান। চিঠিতে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে সিঙ্গাপুরে বিদেশি শ্রমিকদের নেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বিদেশি শ্রমিক নেয়ার পরিমাণ কমেছে ২ শতাংশ। দেশটিতে আরো বেশি পরিমাণে বিদেশি শ্রমিক নেয়ার সম্ভাবনা তাই উজ্জ্বল নয়। কাজেই, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শ্রমিক পাঠানো গেলে তাতে আমাদের ভবিষ্যৎ খুবই ভালো। চিঠিতে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি উন্নত ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। 


বছরের পর বছর এদেশের শ্রমিকরা নিজেদের নিষ্ঠাবান, নিবেদিত ও কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে সুপরিচিত করে তুলেছেন। এটাকে যেকোনো মূল্যে বজায় রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। এ কমিটি শ্রমিক পাঠানোর গোটা প্রক্রিয়াকে দেখভাল করবে। এতে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুরে নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগ বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের দৃশ্যমান ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে শ্রমিকদের নিয়োগদাতা ও গন্তব্য দেশের সরকারকে এটা নিশ্চিত করা যায় যে, আমরা উপযুক্ত ও বাছাইকৃত কর্মী পাঠানোয় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এসব কর্মী আপনার দেশের জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখবে। সুসমন্বিত কৌশল, ধারাবাহিক পদক্ষেপ ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় নিয়ে এটা অর্জন করতে হবে। 


চিঠির শুরুতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সন্ত্রাসী তৎপরতায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে সিঙ্গাপুরে আটক করে। পরে তাদের ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়। স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোর খবরে বলা হয়, ওই ২৭ জন বাংলাদেশি উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সিঙ্গাপুরে কোনো সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা তারা করেনি। এর পর আমি (হাই কমিশনার) পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠক করি। ওই সব বৈঠকে তারা আমাকে জানায়, সিঙ্গাপুরের নিরাপত্তা ও নজরদারি কার্যক্রম জোরদার করা হবে। আপনাদের দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সংস্থাগুলোর মধ্যে উন্নততর সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে। 


সিঙ্গাপুর সরকার কঠোর সংকেত দিয়ে ওই বৈঠকে জানায়, যারা রাষ্ট্রীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর কার্যক্রমে নিয়োজিত তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। তবে যারা সিঙ্গাপুরের আইন, নীতি ও নিয়ম মেনে চলবেন এবং এগুলোর প্রতি অনুগত থাকবেন তাদের শঙ্কার কারণ নেই। এদিকে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে শ্যাসমুগাম সংসদে বলেছেন, সিঙ্গাপুরে কোনো ধরনের কট্টরপন্থার লক্ষণ দেখতে পেলে তা পর্যবেক্ষণ ও তদন্ত অব্যাহত রাখবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। এর পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে সমাজকেও নিজের ভূমিকা পালন করতে হবে। সিঙ্গাপুরের সমাজের বড় অংশকে এসব হুমকি থেকে সুরক্ষিত রাখতে ভূমিকা রাখতে হবে। পরিবার ও স্বজনদের উগ্রবাদী হওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে সিঙ্গাপুরের অধিবাসীদেরও সহায়তা করতে হবে।

Share on Google Plus

About Jessica Hornberger

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment